প্রকাশনার ১০ বছর

২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সুবিদবাজারে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে বাসা দখল করতে হামলার অভিযোগ

দৈনিক জনপদ
প্রকাশিত ০৯ অক্টোবর, বুধবার, ২০২৪ ১৯:৪০:৪৯
সুবিদবাজারে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে বাসা দখল করতে হামলার অভিযোগ

সিলেট নগরীর সুবিদবাজারে বাসার মালিকানা নিয়ে বিচারাধীন মামলা থাকার পরও একের পর এক হামলা ও মামলার অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে বাসা দখল করতে ঘরে আটকে রেখে মারধর করা হয় মালিক দাবিদার নারী ও তার মেয়েকে। পরে যুবদল নেতার হস্তক্ষেপে বাসা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।  বুধবার সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন নগরীর সুবিদবাজারের ফাজিল চিস্ত ৫/৫ নম্বর বাসির মালিক সাবিনা ইয়াছমিন। তিনি নজরুল ইসলাম শিপারের স্ত্রী।  সাবিনা জানান,  সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের কালাইরাগ গ্রামের এমদাদ আলীর ছেলে বিএনপি নেতাকামাল উদ্দিন বাসাটি দখলের চেষ্টা করছেন। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক কমিটির নেতা ছিলেন।গত ২৩ সেপ্টেম্বর র‌্যাব তার স্বামী শিপারকে যে মামলাআটক করে সেই মামলার নেপথ্যে রয়েছেন কামাল। তাকে আটক করার পর ৩০ সেপ্টেম্বরকামাল উদ্দিন বাসায় হামলা, ভাংচুর, মারধর ও লুটপাট করেন। জেলে থাকাবস্থায় ছাত্রজনতার আন্দোলনের ঘটনায় তার স্বামী শিপার, ছেলে হৃদয় ও পঙ্গু ভাড়াটিয়া আজিজ আহমদ ও তার স্কুল পড়ুয়া ছেলে রাহীকেও মামলার আসামি করা হয়।

বাসা নিয়ে বিরোধ প্রসঙ্গে সাবিনা উল্লেখ করেন ফাজিল চিস্ত এলাকার ৫/৫ পাঁচতলা বাসায় তিনি ১৭বছর ধরে মালিক হিসেবে বসবাস করছেন। বাসার মুল মালিক ছিলেন জালালাবাদ থানার চানপুরের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসীর আব্দুল হান্নানের প্রথম স্ত্রী সোনাবান বিবি। ২০১৭ সালে বিএনপি নেতা কামাল উদ্দিন সোনাবান ওরপে মনোয়ারা নামের আরেক মহিলার কাছ থেকে বাসা ক্রয় করেন।এ নিয়ে আদালতে স্বত্ব মামলা (নং- ১৪/২৩) চলছে।কামালবাসার অর্ধেক অংশে বসবাস করছেন। পুরো বাসা দখল নিতে সরকার পতনের পর হামলা-মামলা শুরু করেন। গত ২৮ আগষ্ট নগরীর নয়াসড়কের নান্না বিরানী হাউজের কর্মচারী পরিচয়ে আক্কাস আলী বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় যে মামলা করেন তাতে শিপারকে আসামি করা হয়। এ মামলায় শিপার আটক হওয়ার পর ৩০ সেপ্টেম্বর বাসায় হামলা করেন কামাল। ২৫-৩০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে বাসার সিসিটিভি ক্যামেরাসহ ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। আহত অবস্থায় তিনি ও তার ছেলে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হন। এ ঘটনায় হামলা করতে গেলে পুলিশ গ্রহন না করায় আদালতে মামলা করা হয়।

সাবিনা আরও জানান, তার স্বামী শিপার কারাগারে থাকাবস্থায় আরও দুটি মামলায় তাকে এবং তার ছেলে ও ভাড়াটিয়াকে আসামি করা হয়েছে। গত ৪ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা দাবি করে তার স্বামীকে প্রধান আসামি করে ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা (৮/৪৪৭) করা হয়। বাদি কোম্পানীগঞ্জের কালাইরাগের তৈয়ব আলীর ছেলে মাহমুদুল হাসান। এ মামলায় আসামি করা হয় ভাড়াটিয়া ছাতকের আন্দারগাঁয়ের পঙ্গু আজিজ আহমদ ও তার স্কুল পড়ুয়া ছেলে স্কলার্সহোম স্কুলের শিক্ষার্থী রাহীকে। আসামি করা হয়েছে তার ছেলে হৃদয়কেও। মামলায় ১৯ জুলাইর ঘটনা উল্লেখ করা হয়। অথচ তার ছেলে নজমুল ইসলাম হৃদয় ১৫ জুলাই ছাত্রজনতার আন্দোলনে অংশগ্রহনকালে সে আহত হয়। ২২ জুলাই তার ব্যান্ডেজ খোলা হয়। সে কিভাবে ১৯ জুলাইর ঘটনায় জড়িত ছিল। ৪ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় আরেকটি মামলা করেন আখালিয়ার উপরপাড়ার নুরুল হকের ছেলে সুজন আহমদ। এ মামলায় তার স্বামীকে ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি উল্লেখ করে ২ নং ও ছেলে হৃদয়কে ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করে আসামি করা হয়। অথচ তারা কোনো রাজনৈকি দলের সাথে জড়িত নয়। এসব মামলার বাদিরও খোজ মিলছেনা বলে জানান সাবিনা।

সাবিনা দাবি করেন তার বাসার দখল ও তাদের উচ্ছেদ করতেই এসব মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন কামাল। এর আগেও একাধিক মামলা করেছেন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাসায় তাদের আটকে রেখে মারধর শুরু করেন কামালা ও তার লোকজন। জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদের হস্তক্ষেপে তারা বাসা থেকে উদ্ধার হন। সাবিনা বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন ও তার স্বামীর মুক্তি দাবি করে স¤প্রতি দায়ের করা মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য পুলিশ কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।   প্রেস বিজ্ঞপ্তি